অসীম কুমার উকিল, সুজিত রায় নন্দী, ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী, মাহমুদ হাসান রিপন, আফজাল হোসেন, সাজ্জাদ সাকিব বাদশা, জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, আমিনুল ইসলাম আমিন, রিয়াজুল কবির কাওসার, রোকেয়া প্রাচী, এএসএম মামুদ দুলাল ও এনামুল হক শামীম।
বাংলাট্রিবিউন:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এখনও অনেক সময় বাকি। এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন-প্রত্যাশীদের তোড়জোড়। আর এই তোড়জোড়ে তরুণরাই রয়েছেন এগিয়ে। দলের বেশ কিছু তরুণ মনোনয়নের আশায় নিজ নিজ এলাকায় জনপ্রিয় ও জনসম্পৃক্ত হতে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। কিভাবে জনপ্রিয় হওয়া যায়, আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের দৃষ্টি সীমানায় থাকা যায়, তার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন এক ঝাঁক তরুণ মনোনয়ন-প্রত্যাশী নেতা। তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন। ক্ষমতাসীন দলটির একাধিক কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতার সঙ্গে আলাপকালে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
আওয়ামী লীগের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, মনোনয়-প্রত্যাশীরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করছেন নিজ-নিজ এলাকায়। কিভাবে এলাকার মানুষের মন জয় করা যায়, দলীয় নেতাকর্মীদের তুষ্ট করা যায়, তার জন্য সবই করছেন মনোনয়ন-প্রত্যাশী নেতারা। তারা ঘন-ঘন এলাকায় যাতায়াত করছেন। নিয়মিত রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি যোগ দিচ্ছেন বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে। সময় কাটাচ্ছেন এলাকার মানুষের সঙ্গে। রাজধানী বা অন্যান্য শহরে বসবাসরত এসব নেতা সুযোগ পেলেই ছুটে যাচ্ছেন নির্বাচনি এলাকায়। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগের কেন্দীয় নেতা, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসবক লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা রয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও দলটির মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তরুণ নেতৃত্বের সম্ভাবনা এবার ভালো। ছাত্রলীগের অনেক সাবেক নেতা রয়েছেন, তারা মনোনয়ন পেতে চান, আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের কিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা মনোনয়নের প্রত্যাশায় নিজ নিজ এলাকায় কাজ করছেন।’ তিনি বলেন, ‘এলাকায় জনপ্রিয় নেতারাই এবার মনোনয়ন পাবেন। এ জন্য তৃণমূল নেতাদের মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাশীর গ্রহণযোগ্যতা থাকতে হবে।’
মনোনয়ন প্রত্যাশী কমপক্ষে তিন ডজন নেতা রয়েছেন, যারা ইতোমধ্যেই আলোচিত হয়ে উঠেছেন। প্রায় প্রতি সপ্তাহে নিজ নিজ এলাকায় যাচ্ছেন। এলাকার মানুষের আপদ-বিপদে সাড়া দিয়ে যাচ্ছেন নিয়মিত। পবিত্র রমজান মাসে এলাকার নেতাকর্মী ও জনগণের সঙ্গে ইফতার করছেন মনোনয় প্রত্যাশী নেতারা।
ক্ষমতাসীন দল থেকে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে সর্বাধিক আলোচিতরা হলেন, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এএইচএম মাসুদ দুলাল, আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন (চট্টগ্রাম-১৫), সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল (নেত্রকোনা-৩), আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন (পটুয়াখালী-১), সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম (শরীয়তপুর-২), ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী (চাঁদপুর-৩), কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাডভোকেট এবিএম রিয়াজুল কবীর কাউসার (নরসিংদী-৫), ময়মনসিংহ আাওয়ামী লীগের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, সিলেট থেকে মিসবাহউদ্দিন সিরাজ, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মারুফা আক্তার পপি (জামালপুর), ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন (গাইবান্ধা-৫), কোহেলি কুদ্দুস মুক্তি (নাটোর-৪), নড়াইল-১ আসনে আওয়ামী লীগের নারী সংসদ সদস্য ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী, সাইফুজ্জামান শিখর (মাগুরা-১), শাহে আলম (বরিশাল-২), শফি আহমেদ (নেত্রকোনা-৪), অজয় কর খোকন (কিশোরগঞ্জ-৫), পনিরুজ্জামান তরুণ (ঢাকা-১), ড. আওলাদ হোসেন (ঢাকা-৪), স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাউসার, যুবলীগের ইসমাঈল হোসেন সম্রাট (ঢাকা-৮), যুবলীগের মঈনুল হোসেন খান নিখিল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু (ঢাকা-১৫), শেখ সোহেল রানা টিপু (রাজবাড়ী-১), নারী সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নূরজাহান বেগম মুক্তা (চাঁদপুর-৫), মাইনুদ্দিন হাসান চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১৪), জহিরউদ্দীন মাহমুদ লিপটন (ফেনী-৩) একই আসনে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচীও, পিরোজপুর-১ আসনে আলোচিত হয়ে উঠেছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাজ্জাদ সাকিব বাদশা, সাবেক ছাত্রনেতা ও মঠবাড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন (পিরোজপুর-৩)।
এই মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নিজ-নিজ নির্বাচনি এলাকা চষে বেড়াচ্ছেন। স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে যেমন মিশছেন, তেমনি সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়েও লোকজনের সঙ্গে কথা বলছেন, সমস্যার কথা শুনছেন।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বাংলা ট্র্রিবিউনকে বলেন, এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে থাকতে চাই। তাই সময়-সুযোগ হলেই তাদের কাছে ছুটে যাই। আমরা যারা রাজনীতি করি, তাদের শক্তিই জনগণ। তাই যত বেশি জনগণ বেষ্টিত থাকা যায়, সেই চেষ্টা করি। সাধ্য মতো দলের হয়ে জনগণের পাশে থাকার চেষ্টা করছি।’
এ প্রসঙ্গে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহামুদ হাসান রিপন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের একজন কর্মী হয়ে এলাকার জনগণের সেবা করার চেষ্টা করি সবসময়। যতটুকু সম্ভব পাশে থাকি।’ তিনি বলেন, ‘আমার এলাকার মানুষ আমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জন-সম্পৃক্ত হতে সব নেতার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এলাকায় যাতায়াতের মধ্য দিয়ে তার নির্দেশ পালন করছি।’
ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ সাকিব বাদশা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এলাকার জনগণের পাশে থাকার চেষ্টা করি। এলাকার মানুষের জন্য কাজ করার আগ্রহ আছে।’ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা যদি মনোনয়ন দিলে জনসেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখবেন বলেও অঙ্গীকার করেন।
পাঠকের মতামত: